শুক্রবার, ১০ জুন, ২০১৬

পাংখাবরদার

পৃথিবীর পোঁদে ---
লাথি মারি আমি অবিরত।
অযথা গৎবাঁধা জীবনাচারে
লিপ্ত যারা তাদের মত্ত মাথায়
নিরুদ্বেগ নিরবতায় বিবেক হেগে যায়
অবিশ্রাম অবিমিশ্র ঘৃণায়।
ভদ্রতার তোয়াক্কা না করে
নাক খোঁটা খ্যাপশা খুড়োর
খাপছাড়া বদভ্যাসের মতো
পৃথিবীর চিরায়ত নিয়ম।
ভাগ্যের ভানুমতির খেলে
খিঁচিয়ে আছে মন ও মেজাজ,
কুঁচকে থাকে থকথকে মগজ।

বিধাতার বৃদ্ধ পৃথিবীতে
উদ্ধত উভচর আমি;
বাস্তবতার উষ্ণ উম্মা
গালে যার জ্বালা ধরায়।
নসিবের নোংরা নর্দমায়
ফেলে দেয়া এঁটো অালু ভাজির
মতো লেপ্টে আছে যার
অন্তহীন অভুক্ত অস্তিত্ব।


দুঃখের গোবরগাদায়
গুবরেপোকার মতো
সেঁটে থাকা মুমূর্ষু সুখের
স্বপ্ন কখনো দেখি নি আমি।
নিয়তির নিষ্ঠুর পরিহাস
তাড়িয়ে তাড়িয়ে
উপভোগও করিনি কখনও,
বুকে গেঁটিস দেয়া
রোগাপটকা বেশ্যা বাইজীর
স্ফীত বক্ষের মতোনই
পৃথিবীর ফাঁপা জৌলুস
মোহাবিষ্টও কখনও করে নি আমায়।

কিন্তু আজ আমি প্রেয়সির---
লালাভ অাভাযুক্ত মিষ্টি মেদুর
হাস্যোজ্জ্বল গালে ফুটে ওঠা
টুকরো টোলের মতোন পৃথিবী চাই।
যেখানে স্নেহের সীমানা থাকবে না,
থাকবে না ক্ষুধার ক্ষিপ্রতায়
মাতৃত্বের অকাল মৃত্যুর সম্ভাবনা,
মায়ের স্ফীত স্তনের মতো
নোনা সাগরের মাটি কামড়ে
পড়ে থাকবে না শরণার্থী শিশু।
অপূর্ণ থাকবে না বেশ্যার
অক্ষতযোনির অসম্ভব স্বপ্ন।
যাপিত জীবনের রকমারি যাতনা,
নগ্ন নগণ্য গ্লানি প্রচ্ছন্ন হয়ে যাবে
বাউন্ডারি-বিহীন ভালোবাসায়।

তাই তো ক ফোঁটা হেমলক বিষের
বড্ড প্রয়োজন আজ,
যা উদরস্থ করে উতরে যাবে
কর্তব্যের কঠোর উৎকণ্ঠা।
ভুবনেশ্বরের এক শিশি স্যাঁতসেঁতে
বীর্যেরও বেশ প্রয়োজন।
যা থেকে ভুবনেশ্বরীর নোংরা নিতম্ব হতে
জন্ম নেবে পূত পবিত্র
পৃথিবীর ভাবী যীশুরা।
সভ্যতার সূতিকাগারে
শুভাগমন হবে নতুন সংস্কারের,
সর্বংসহা স্নিগ্ধা সরোজের।

অবশেষে আমার মতোন
মহা পাতকেরাই লুটে নেবে
পৃথিবীর যত জঞ্জাল।
অতঃপর বিষাক্ত ভবের বলয় হতে
নিঃশব্দে লীন হয়ে যাবে তারা
মহাকালের নির্লিপ্ত নিরন্ধ্রতায়।
পথহারা পঙ্কিল পৃথিবী পাবে
আনন্দ আবৃত আগামী আর
সভ্যতার নতুন রাহাবার,
আমি হবো ওপরকার ক্লান্ত বিধাতার
বাধ্য পাংখাবরদার।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন